![]() |
গোপন প্রিয়া |
গোপন প্রিয়া
কাজি নজরুলইসলাম
=================================
পাইনি ব’লে আজো তোমায় বাসছি ভালো, রাণি,
মধ্যেসাগর, এ-পারও-পার করছিকানাকানি!
আমিএ-পার, তুমিও-পার,
মধ্যেকাঁদে বাধার পাথার
ও-পার হ’তেছায়া-তরু দাও তুমিহাত্ছানি,
আমিমরু, পাইনে তোমার ছায়ারছোঁওয়াখানি।
নাম-শোনা দুই বন্ধুমোরা, হয়নি পরিচয়!
আমারবুকে কাঁদছে আশা, তোমারবুকে ভয়!
এই-পারী ঢেউ বাদল-বায়ে
আছড়েপড়ে তোমার পায়ে,
আমারঢেউ-এর দোলায় তোমারক’রলো নাকূল ক্ষয়,
কূলভেঙেছে আমার ধারে-তোমারধারে নয়!
চেনারবন্ধু, পেলাম না ক’ জানার অবসর।
গানেরপাখী ব’সেছিলামদু’দিন শাখার’ পর।
গানফুরালো যাব যবে
গানেরকথাই মনে রবে,
পাখীতখন থাকবো না ক’-থাকবে পাখীর ঘর,
উড়বআমি,-কাঁদবে তুমি ব্যথারবালুচর!
তোমারপারে বাজল কখন আমারপারের ঢেউ,
অজানিতা! কেউ জানে না, জানবেনা ক’ কেউ।
উড়তেগিয়ে পাখা হ’তে
একটিপালক প’ড়লেপথে
ভুলে’ প্রিয় তুলে যেন খোঁপায়গুঁজে নেও!
ভয়কি সখি? আপনিতুমি ফেলবে খুলে এ-ও!
বর্ষা-ঝরা এমনি প্রাতেআমার মত কি
ঝুরবেতুমি একলা মনে, বনেরকেতকী?
মনেরমনে নিশীথ-রাতে
চুমুদেবে কি কল্পনাতে?
স্বপ্নদেখে উঠবে জেগে, ভাববেকত কি!
মেঘেরসাথে কাঁদবে তুমি, আমারচাতকী!
দূরেরপ্রিয়া! পাইনি তোমায় তাইএ কাঁদন-রোল!
কূলমেলে না,-তাই দরিয়ায়উঠতেছে ঢেউ-দোল!
তোমায়পেলে থামত বাঁশী,
আসতমরণ সর্বনাশী।
পাইনিক’ তাই ভ’রে আছে আমারবুকের কোল।
বেণুরহিয়া শূন্য ব’লেউঠবে বাঁশীর বোল।
বন্ধু, তুমি হাতের-কাছের সাথের-সাথী নও,
দূরেযত রও এহিয়ার তত নিকট হও।
থাকবেতুমি ছায়ার সাথে
মায়ারমত চাঁদনী রাতে!
যতগোপন তত মধুর-নাইবা কথা কও!
শয়ন-সাথে রও নাতুমি নয়ন-পাতে রও!
ওগোআমার আড়াল-থাকা ওগোস্বপন-চোর!
তুমিআছ আমি আছিএই তো খুশিমোর।
কোথায়আছ কেমনে রাণি
কাজকি খোঁজে, নাইবা জানি!
ভালোবাসিএই আনন্দে আপনিআছি ভোর!
চাইনা জাগা, থাকুকচোখে এমনি ঘুমের ঘোর!
রাত্রেযখন এক্লা শোব-চাইবেতোমার বুক,
নিবিড়-ঘন হবে যখনএকলা থাকার দুখ,
দুখেরসুরায় মস্ত্ হ’য়েথাকবে এ-প্রাণতোমায় ল’য়ে,
কল্পনাতেআঁকব তোমার চাঁদ-চুয়ানোমুখ!
ঘুমেজাগায় জড়িয়ে র’বে, সেই তো চরম সুখ!
গাইবআমি, দূরের থেকে শুনবেতুমি গান।
থামবেআমি-গান গাওয়াবে তোমারঅভিমান!
শিল্পীআমি, আমি কবি, তুমিআমার আঁকা ছবি,
আমারলেখা কাব্য তুমি, আমাররচা গান।
চাইবনা ক’, পরানভ’রে ক’রে যাব দান।
তোমারবুকে স্থান কোথা গোএ দূর-বিরহীর,
কাজকি জেনে?- তলকেবা পায় অতল জলধির।
গোপনতুমি আসলে নেমে
কাব্যেআমার, আমার প্রেমে,
এই-সে সুখে থাকবেবেঁচে, কাজ কি দেখেতীর?
দূরেরপাখী-গান গেয়ে যাই, না-ই বাঁধিলামনীড়!
বিদায়যেদিন নেবো সেদিন নাই-বা পেলাম দান,
মনেআমায় ক’রবেনা ক’-সেইতো মনে স্থান!
যে-দিন আমায় ভুলতেগিয়ে
করবেমনে, সে-দিন প্রিয়ে
ভোলারমাঝে উঠবে বেঁচে, সেইতো আমার প্রাণ!
নাইবা পেলাম, চেয়েগেলাম, গেলে গেলাম গান!
তোমার কাছে
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
========================
সকাল নয়,তবুও আমার
প্রথম দেখার ছটফটানি,
দুপুর নয়,তবুও আমার
দুপুর বেলার প্রিয় তমাশা।
ছিলনা নদী,তবুও নদী
পেরিয়ে আসি তোমার কাছে
তুমি ছিলেনা তবুওযেন
তোমার কাছেই বেড়াতে আসি।
শিরীষ গাছে রোদ লেগেছে
শিরীষ কোথায়,মরুভুমি
বিকেল নয়,তবুও আমার
বিকেল বেলার ক্ষুৎপিপাসা।
চিঠির খামে গন্ধবকুল
তৃষ্না ছোটে বিদেশ পানে,
তুমি ছিলেনা,তবুও যেন মন
তোমার কছেই বেড়াতে আনে।।
তুমি যখনপ্রশ্নকরো
- মহাদেব সাহা –
====================
তুমি যখন প্রশ্ন করো
আমি কি তোমায় ভালোবাসি?
অন্ধকারে লুকিয়ে মুখ
আমি নিজের মনেই হাসি ।
উত্তরে কি বলবো বলো
বিশ্বকোষেও হয়তো নাই,
উথালপাথাল খুঁজে মরি
কোথায় যোগ্য শব্দ পাই ।
জানো কি এই প্রশ্নে তোমার
হঠাত্ থামে নদীর ধারা
আকাশখানি কালো করে
মেঘে ঢাকা সন্ধ্যাতারা ।
তার চেয়েও গভীর ঘন
লজ্জা ঢাকে আমার মুখ
পাইনে খুঁজে একটি কথাও
শঙ্কা ভয়ে কাঁপে বুক ।
এতোদিনেও বোঝেনি যে
আজ বোঝাবো কোন ভরসায়?
না বলা সেই ছোট্টো কথা
বলিনি কি কোনো ভাষায়?
বলিনি কি এই কথাটি
তোমার দিকে নীরব চেয়ে,
এই গান কি সারাজীবন
জীবন দিয়ে যাইনি গেয়ে?
সেই কথা তো জানে ভালো
শিশির ভেজা ভোরের ফুল
তুমি যখন প্রশ্ন করো
আমি করি অধিক ভুল ।
আকাঙ্খা
--আবুল হাসান
===================
তুমি কি আমার আকাশ হবে?
মেঘ হয়ে যাকে সাজাব
আমার মনের মত করে ।
তুমি কি আমার নদী হবে?
যার নিবিড় আলিঙ্গনে ধন্য হয়ে
তরী বেশে ভেসে যাব কোন অজানা গন্তব্যের পথে ।
তুমি কি আমার জোছনা হবে?
যার মায়াজালে বিভোর হয়ে
নিজেকে সঁপে দেব সকল বাস্তবতা ভুলে ।
তুমি কি আমার কবর হবে?
যেখানে শান্তির শীতল বাতাসে
বয়ে যাবে আমার চিরনিদ্রার অফুরন্ত প্রহর।
তোমার ক্ষমতা
হুমায়ুন আজাদ
=================
তুমি ভাঙতে পারো বুক শুষে নিতে পারো সব রক্ত ও লবণ
বিষাক্ত করতে পারো ঘুম স্বপ্নময় ঘুমের জগত
তছনছ ক’রে দিতে পারো তুমি বন উপবন
উল্টেপাল্টে দিতে পারো সব সিঁড়ি লিফট্ রাজপথ
মিশিয়ে দিতেও পারো সঙ্গীতের সুরেসুরে বিষ
আমাকে প্রগাঢ় কোনো আত্নহত্যায় উৎসাহিত ক’রে দিতে পারো
ম’রে যাবে ধানক্ষেত ঝ’রে যাবে পাখিদের শিস
তোমার ক্ষমতা আছে পারো তুমি আরো
আমাকে মাতাল ক’রে ছেড়ে দিতে পারো তুমি গলির ভেতরে
সমস্ত সড়কে তুমি জ্বালতে পারো লাল সিগনাল
বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ ক’রে দিতে পারো জীবনের সবগুলো ঘরে
এর বেশি আর তুমি কি পারো তমাল?
তুমি হাতখানি রাখ
হুমায়ুন আজাদ
মূলঃ হেনরিকহাইনে
==========================
প্রিয়তমা, তুমি হাতখানি রাখো আমার গুমোট বুকে।
শুনতে পাচ্ছো শব্দ? কে যেনো হাতুড়ি ঠুকে চলছে?
সেখানে এক মিস্ত্রি থাকে,যে বানিয়ে চলেছে
এক শবাধার ।
কার জন্যে জানো?—– আমার, আমার ।
উল্লাসে বিদ্বেষে নিরন্তর সে হাতুড়ি
ঠুকছে দুই হাতে,
কিছুতে ঘুমোতে পারছিনা আমি,
দিনে কিংবা রাতে।
মিস্ত্রি, দ্রুত করো, তুমি কাজ
শেষ করো তাড়াতাড়ি,
যাতে আমি অবশেষে শান্তিতে ঘুম যেতে পারি ।।
গোপন প্রিয়া
কাজি নজরুল ইসলাম
======================================
পাইনি ব’লে আজো তোমায় বাসছি ভালো, রাণি,
মধ্যে সাগর, এ-পার ও-পার করছি কানাকানি!
আমি এ-পার, তুমি ও-পার,
মধ্যে কাঁদে বাধার পাথার
ও-পার হ’তে ছায়া-তরু দাও তুমি হাত্ছানি,
আমি মরু, পাইনে তোমার ছায়ার ছোঁওয়াখানি।
নাম-শোনা দুই বন্ধু মোরা, হয়নি পরিচয়!
আমার বুকে কাঁদছে আশা, তোমার বুকে ভয়!
এই-পারী ঢেউ বাদল-বায়ে
আছড়ে পড়ে তোমার পায়ে,
আমার ঢেউ-এর দোলায় তোমার ক’রলো না কূল ক্ষয়,
কূল ভেঙেছে আমার ধারে-তোমার ধারে নয়!
চেনার বন্ধু, পেলাম না ক’ জানার অবসর।
গানের পাখী ব’সেছিলাম দু’দিন শাখার’ পর।
গান ফুরালো যাব যবে
গানের কথাই মনে রবে,
পাখী তখন থাকবো না ক’-থাকবে পাখীর ঘর,
উড়ব আমি,-কাঁদবে তুমি ব্যথার বালুচর!
তোমার পারে বাজল কখন আমার পারের ঢেউ,
অজানিতা! কেউ জানে না, জানবে না ক’ কেউ।
উড়তে গিয়ে পাখা হ’তে
একটি পালক প’ড়লে পথে
ভুলে’ প্রিয় তুলে যেন খোঁপায় গুঁজে নেও!
ভয় কি সখি? আপনি তুমি ফেলবে খুলে এ-ও!
বর্ষা-ঝরা এমনি প্রাতে আমার মত কি
ঝুরবে তুমি একলা মনে, বনের কেতকী?
মনের মনে নিশীথ-রাতে
চুমু দেবে কি কল্পনাতে?
স্বপ্ন দেখে উঠবে জেগে, ভাববে কত কি!
মেঘের সাথে কাঁদবে তুমি, আমার চাতকী!
দূরের প্রিয়া! পাইনি তোমায় তাই এ কাঁদন-রোল!
কূল মেলে না,-তাই দরিয়ায় উঠতেছে ঢেউ-দোল!
তোমায় পেলে থামত বাঁশী,
আসত মরণ সর্বনাশী।
পাইনি ক’ তাই ভ’রে আছে আমার বুকের কোল।
বেণুর হিয়া শূন্য ব’লে উঠবে বাঁশীর বোল।
বন্ধু, তুমি হাতের-কাছের সাথের-সাথী নও,
দূরে যত রও এ হিয়ার তত নিকট হও।
থাকবে তুমি ছায়ার সাথে
মায়ার মত চাঁদনী রাতে!
যত গোপন তত মধুর-নাই বা কথা কও!
শয়ন-সাথে রও না তুমি নয়ন-পাতে রও!
ওগো আমার আড়াল-থাকা ওগো স্বপন-চোর!
তুমি আছ আমি আছি এই তো খুশি মোর।
কোথায় আছ কেমনে রাণি
কাজ কি খোঁজে, নাই বা জানি!
ভালোবাসি এই আনন্দে আপনি আছি ভোর!
চাই না জাগা, থাকুক চোখে এমনি ঘুমের ঘোর!
রাত্রে যখন এক্লা শোব-চাইবে তোমার বুক,
নিবিড়-ঘন হবে যখন একলা থাকার দুখ,
দুখের সুরায় মস্ত্ হ’য়ে
থাকবে এ-প্রাণ তোমায় ল’য়ে,
কল্পনাতে আঁকব তোমার চাঁদ-চুয়ানো মুখ!
ঘুমে জাগায় জড়িয়ে র’বে, সেই তো চরম সুখ!
গাইব আমি, দূরের থেকে শুনবে তুমি গান।
থামবে আমি-গান গাওয়াবে তোমার অভিমান!
শিল্পী আমি, আমি কবি,
তুমি আমার আঁকা ছবি,
আমার লেখা কাব্য তুমি, আমার রচা গান।
চাইব না ক’, পরান ভ’রে ক’রে যাব দান।
তোমার বুকে স্থান কোথা গো এ দূর-বিরহীর,
কাজ কি জেনে?- তল কেবা পায় অতল জলধির।
গোপন তুমি আসলে নেমে
কাব্যে আমার, আমার প্রেমে,
এই-সে সুখে থাকবে বেঁচে, কাজ কি দেখে তীর?
দূরের পাখী-গান গেয়ে যাই, না-ই বাঁধিলাম নীড়!
বিদায় যেদিন নেবো সেদিন নাই-বা পেলাম দান,
মনে আমায় ক’রবে না ক’-সেই তো মনে স্থান!
যে-দিন আমায় ভুলতে গিয়ে
করবে মনে, সে-দিন প্রিয়ে
ভোলার মাঝে উঠবে বেঁচে, সেই তো আমার প্রাণ!
নাই বা পেলাম, চেয়ে গেলাম, গেলে গেলাম গান!
টেলিফোনে প্রস্তাব
নির্মলেন্দু গুণ
=======================
আমি জানি, আমাদের কথার ভিতরে এমন কিছুই নেই,
অনর্থকরলেও যার সাহায্যে পরস্পরেরপ্রতি আমাদের
দুর্বলতাপ্রমাণ করা সম্ভব।আমিও তো তোমার মতোই
অসম্পর্কিত-জ্ঞানে এতদিন উপস্থাপনকরেছি আমাকে।
তুমিযখন টেলিফোন হয়ে প্রবেশকরেছো আমার কর্ণে-
আমারঅপেক্ষাকাতর হৃৎপিণ্ডের সামান্য কম্পনও আমি
তোমাকেবুঝতে দিই নি।দুর্বলতা ধরা পড়ে যায়পাছে।
তুমিওনিষ্ঠুর কম নও, তুমিবুঝতে দাওনা কিছু।জানি,
আমারকাছেই তুমি শিখেছিলে এইলুকোচুরি করা খেলা।
কিন্তুএখন, যখন ক্রমশ ফুরিয়েআসছে আমাদের বেলা,
তখনভেতরের চঞ্চলতাকে আমরা আর কতটালুকাবো?
অস্তযাবার আগে প্রবল সূর্যওচুম্বন করে পর্বত শিখর,
আরআমরা তো দুর্বল মানুষ, মিলনে বিশ্বাসী নর-নারী।
কারভয়ে, কী প্রয়োজনে আমরাতাহলে শামুকের মতো
স্পর্শমাত্রভিতরে লুকাই আমাদের পল্লবিতবাসনার শূঁড়।
তারচেয়ে চল এক কাজকরি, তুমি কান পেতেশোনো,
তুমিশুধু শোনো, আর আমিশুধু বলি, বলি, ভালবাসি।
দুঃখ করোনা,বাচো
নির্মলেন্দু গুণ
=====================
দুঃখকে স্বীকার করো না,–সর্বনাশ হয়ে যাবে।
দুঃখকরো না, বাঁচো, প্রাণভ’রে বাঁচো।
বাঁচারআনন্দে বাঁচো। বাঁচো, বাঁচো এবং বাঁচো।
জানিমাঝে-মাঝেই তোমার দিকেহাত বাড়ায় দুঃখ,
তারকালো লোমশ হাত প্রায়ইতোমার বুক ভেদ করে
চলেযেতে চায়, তা যাক, তোমার বক্ষ যদি দুঃখের
নখরাঘাতেছিন্নভিন্ন হয়; যদি গলগলকরে রক্ত ঝরে,
তবুদুঃখের হাতকে তুমি প্রশ্রয়দিও না মুহূর্তের তরে।
তারসাথে করমর্দন করো না, তাকে প্রত্যাখান করো।
অনুশোচনাহচ্ছে পাপ, দুঃখের একনিপুণ ছদ্মবেশ।
তোমাকেবাঁচাতে পারে আনন্দ।তুমি তার হাত ধরো,
তারহাত ধরে নাচো, গাও, বাঁচো, ফুর্তি করো।
দুঃখকেস্বীকার করো না, মরেযাবে, ঠিক মরে যাবে।
যদিমরতেই হয় আনন্দের হাতধ’রে মরো।
বলো, দুঃখ নয়, আনন্দের মধ্যেইআমার জন্ম,
আনন্দেরমধ্যেই আমার মৃত্যু, আমারঅবসান।
প্রার্থণা
অরুণ কুমার সরকার
===========================
যদি মরে যাই,
ফুল হযে যেন ঝরে যাই।
যে ফুলের নেই কোন ফল,
যে ফুলের গন্ধই সম্বল।
উত্তরল রাত্রীতে বিলিন।
যেই রাত্রী তোমারি দখলে,
আমার সর্বস্ব নিয়েজ্বলে।
আমার সত্তাকে করে ছাই,
ফুল হয়েই যেন ঝরে যাই।
যে টেলিফোন আসার কথা
পূর্নেন্দু পত্রী
=====================================
যে টেলিফোন আসার কথা সে টেলিফোন আসেনি।
প্রতীক্ষাতেপ্রতীক্ষাতে
সূর্যডোবে রক্তপাতে
সবনিভিয়ে একলা আকাশ নিজেরশূণ্য বিছানাতে।
একান্তেযার হাসির কথা হাসেনি।
যেটেলিফোন আসার কথা আসেনি।
অপেক্ষমানবুকের ভিতর কাঁসন ঘন্টাশাঁখের উলু
একশবনেরবাতাস এস একটা গাছেহুলুস্থুলু
আজবুঝি তার ইচ্ছে আছে
ডাকবেআলিঙ্গনের কাছে
দীঘিরপড়ে হারিয়ে যেতে সাঁতারজলের মত্ত নাচে।
এখনোকি ডাকার সাজেসাজেনি?
যেটেলিফোন বাজার কথা বাজেনি।
তৃষ্ণাযেন জলের ফোঁটা বাড়তেবাড়তে বৃষ্টি বাদল
তৃষ্ণাযেন ধূপের কাঠি গন্ধেআঁকে সুখের আদল
খাঁখাঁ মনের সবটা খালি
মরানদীর চড়ার বালি
অথচঘর দুয়ার জুড়েতৃষ্ণা বাজায় করতালি।
প্রতীক্ষাতাই প্রহরবিহীন
আজীবনও সর্বজনীন
সরোবরতো সবার বুকেই, পদ্ম কেবল পর্দানশীল।
স্বপ্নকেদেয় সর্বশরীর, সমক্ষে সে ভাসেনা।
যেটেলিফোন আসার কথা সচরাচরআসে না।
যন্ত্রণার প্রতিকার
সাইদুর রহমান
============================
আগুন আগুন খেলবে আমার সাথে
আমাকে পোড়াবে ইচ্ছে মত,
যদি তাই ভেবে থাক
বল না একবার
তোমাকে সুখী করতে
ভিতরে আগুন জ্বালাবো শতবার।
আমায় পোড়াতে গিয়ে
পুড়েছে তোমার মন
অথচ ভেবেছিলে এই দাহ- শিখায়
পুড়তে পুড়তে দেহ অঙ্গার করে
আমায় যন্ত্রণায় রাখবে সারাক্ষণ।
তুমিতো পুড়েছ নিজেই
তোমার দেয়া আগুনের পাতা ফাঁদে
অথচ এই উনুন ভরা আগুন নিয়ে
তোমায় খেলতে নিষেধ করেছি
তোমায় সাবধান করেছি প্রতিবার।
জানি, আজ নিয়তি তোমার বড়ই কঠিন
সমাজে তুমি উপহাসে- পরিহার
কেবল আমি এ আগুন নেভাতে পারি
করতে পারি তোমার যন্ত্রণার প্রতিকার।
0 Comments